কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চিনবেন যেভাবে

ফাইল ফটো

 

কোরবানি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসেছে পশুর হাট। প্রস্তুত রাজধানীর পশুরহাটগুলোও। কোরবানির জন্য সবাই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে হৃষ্টপুষ্ট গরু বা ছাগল কিনতে চায়। বড় গরু কিনতে গিয়ে স্টেরয়েড ট্যাবলেট কিংবা ইঞ্জেকশন দেওয়া গরু কিনে প্রতারিত হওয়ার আগেই সুস্থ গরু চেনার উপায়গুলো জেনে নিন।

মোটাতাজা করা গরু চিনতে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে-

অস্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর ফুসফুস কিছুটা দুর্বল হয়ে থাকে ফলে বেশিক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারে না। দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো দুর্বল থাকে। খুব ক্লান্ত দেখায়।

গরুর রানের মাংসের পুরুত্ব: স্বাভাবিক উপায়ে মোটাতাজা গরুর পেছনের রানের মাংস শক্ত হয়। স্টেরয়েড হরমোন ইনজেকশন দেওয়া গরুর রানের মাংস নরম হয়। মাংসের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়ে পেশির কোষে অতিরিক্ত পানি জমার কারণে মাংস নরম হয়ে যায়। এই ধরনের গরুর প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যায়।

লালা বা ফেনা: আবহাওয়া খুব গরম না থাকলে যদি গরু মুখে লালা বা ফেনা বেশি থাকে তাহলে তা কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা বলে ধারণা করা হয়। তবে সাময়িকভাবে খাবারের সমস্যার কারণেও অতিরিক্ত লালা বা ফেনা এবং পেট ফাঁপা দেখা যায়। যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে, সেই গরু কেনার জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে।

আচরণ: স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হৃষ্টপুষ্ট গরুর আচরণ হবে সক্রিয়। দৃষ্টি থাকবে তীক্ষ্ম, যেকোনো পরিবেশে তারা প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করবে। আর কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা গরু পরিবেশ সম্পর্কে ততটা সজাগ থাকবে না। ক্লান্ত এবং নির্জীবের মতো মনে হতে পারে। গরু অস্বস্তিকর অবস্থা অনুভব করবে।

হাঁটাচলা: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকৃত গরুর শরীর ভারী হয়ে যায়। বেশি পানি জমার কারণে সহজে হাঁটতে চায় না এবং এক জায়গায় বসে থাকে। বসে থাকা গরুকে উঠিয়ে হাঁটিয়ে দেখা উত্তম।

খাবারে অনাগ্রহ: সুস্থ ও স্বাভাবিক উপায়ে বেড়ে উঠা গরু খাবার দেখতেই জিহ্বা দিয়ে টেনে খাওয়ার চেষ্টা করবে। অন্য সমস্যা থাকলে খাবারে অনাগ্রহ দেখায়।

মাজেল শুষ্ক থাকা: অসুস্থ গরুর মাজেল বা নাকের উপরের অংশ শুষ্ক থাকে। কিন্তু সুস্থ উপায়ে বেড়ে উঠা গরুর মাজেল বা নাকের উপরের অংশ ভেজা ভেজা থাকে।

পা ও মুখ ফোলা: ইনজেকশন দিয়ে কিংবা ওষুধ খাইয়ে মোটা করা গরুর পা ও মুখ ফোলা থাকবে, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় এই গরু ঝিমাবে, সহজে নড়াচড়া করবে না।

তাপমাত্রা: স্বাভাবিক পরিবেশের তাপমাত্রায় সুস্থ গরুর তাপমাত্রা সাধারণত ১০০-১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে থাকে। গরুর শরীরে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে হলে বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ। পরিবেশ এবং ভ্রমণ জনিত ধকলের কারণেও তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে বিক্রেতার কাছে গরু হাটে পৌঁছেছে কখন সে সময়টা জেনে নিতে হবে। দূর থেকে ভ্রমণ করে আসা গরুর তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে সাধারণত ১-২ ঘণ্টা সময় লাগে। অন্যকিছু হলে তা সমস্যা হিসেবে পৌঁছেছে নেয়া যেতে পারে।  সূএ : ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার

» গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করে শেষ মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

» বাসে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় তৈরি পাইপ গানসহ দুই যাত্রী গ্রেপ্তার

» সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন

» উত্তর ভারতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানো হচ্ছে ‘পুষ্পা-২’

» ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ কনসার্ট ঘিরে যান চলাচলে নির্দেশনা

» সাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু

» বেইলি ব্রিজ ভেঙে তুরাগ ন‌দে ট্রাক, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ

» সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

» ক‍্যানবেরায় ১২ প্রবাসীকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ‍্যাওয়ার্ড প্রদান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চিনবেন যেভাবে

ফাইল ফটো

 

কোরবানি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসেছে পশুর হাট। প্রস্তুত রাজধানীর পশুরহাটগুলোও। কোরবানির জন্য সবাই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে হৃষ্টপুষ্ট গরু বা ছাগল কিনতে চায়। বড় গরু কিনতে গিয়ে স্টেরয়েড ট্যাবলেট কিংবা ইঞ্জেকশন দেওয়া গরু কিনে প্রতারিত হওয়ার আগেই সুস্থ গরু চেনার উপায়গুলো জেনে নিন।

মোটাতাজা করা গরু চিনতে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে-

অস্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর ফুসফুস কিছুটা দুর্বল হয়ে থাকে ফলে বেশিক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারে না। দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো দুর্বল থাকে। খুব ক্লান্ত দেখায়।

গরুর রানের মাংসের পুরুত্ব: স্বাভাবিক উপায়ে মোটাতাজা গরুর পেছনের রানের মাংস শক্ত হয়। স্টেরয়েড হরমোন ইনজেকশন দেওয়া গরুর রানের মাংস নরম হয়। মাংসের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়ে পেশির কোষে অতিরিক্ত পানি জমার কারণে মাংস নরম হয়ে যায়। এই ধরনের গরুর প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যায়।

লালা বা ফেনা: আবহাওয়া খুব গরম না থাকলে যদি গরু মুখে লালা বা ফেনা বেশি থাকে তাহলে তা কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা বলে ধারণা করা হয়। তবে সাময়িকভাবে খাবারের সমস্যার কারণেও অতিরিক্ত লালা বা ফেনা এবং পেট ফাঁপা দেখা যায়। যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে, সেই গরু কেনার জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে।

আচরণ: স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হৃষ্টপুষ্ট গরুর আচরণ হবে সক্রিয়। দৃষ্টি থাকবে তীক্ষ্ম, যেকোনো পরিবেশে তারা প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করবে। আর কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা গরু পরিবেশ সম্পর্কে ততটা সজাগ থাকবে না। ক্লান্ত এবং নির্জীবের মতো মনে হতে পারে। গরু অস্বস্তিকর অবস্থা অনুভব করবে।

হাঁটাচলা: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকৃত গরুর শরীর ভারী হয়ে যায়। বেশি পানি জমার কারণে সহজে হাঁটতে চায় না এবং এক জায়গায় বসে থাকে। বসে থাকা গরুকে উঠিয়ে হাঁটিয়ে দেখা উত্তম।

খাবারে অনাগ্রহ: সুস্থ ও স্বাভাবিক উপায়ে বেড়ে উঠা গরু খাবার দেখতেই জিহ্বা দিয়ে টেনে খাওয়ার চেষ্টা করবে। অন্য সমস্যা থাকলে খাবারে অনাগ্রহ দেখায়।

মাজেল শুষ্ক থাকা: অসুস্থ গরুর মাজেল বা নাকের উপরের অংশ শুষ্ক থাকে। কিন্তু সুস্থ উপায়ে বেড়ে উঠা গরুর মাজেল বা নাকের উপরের অংশ ভেজা ভেজা থাকে।

পা ও মুখ ফোলা: ইনজেকশন দিয়ে কিংবা ওষুধ খাইয়ে মোটা করা গরুর পা ও মুখ ফোলা থাকবে, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় এই গরু ঝিমাবে, সহজে নড়াচড়া করবে না।

তাপমাত্রা: স্বাভাবিক পরিবেশের তাপমাত্রায় সুস্থ গরুর তাপমাত্রা সাধারণত ১০০-১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে থাকে। গরুর শরীরে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে হলে বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ। পরিবেশ এবং ভ্রমণ জনিত ধকলের কারণেও তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে বিক্রেতার কাছে গরু হাটে পৌঁছেছে কখন সে সময়টা জেনে নিতে হবে। দূর থেকে ভ্রমণ করে আসা গরুর তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে সাধারণত ১-২ ঘণ্টা সময় লাগে। অন্যকিছু হলে তা সমস্যা হিসেবে পৌঁছেছে নেয়া যেতে পারে।  সূএ : ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com